Top News

মমতার ‘মৃত্যুকুম্ভ’ শব্দবন্ধ ‘হাতিয়ার’ করে ময়দানে বিজেপি, একযোগে তোপ সুকান্ত-শুভেন্দু-মালবীয়র

 

মমতার ‘মৃত্যুকুম্ভ’ শব্দবন্ধ ‘হাতিয়ার’ করে ময়দানে বিজেপি, একযোগে তোপ সুকান্ত-শুভেন্দু-মালবীয়র



মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের খবর ও ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তে না পড়তেই আক্রমণ তুঙ্গে তুলেছে বিজেপি। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজমুদার বা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তো বটেই, মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অমিত মালবীয়ও।


মহাকুম্ভ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যকে ঘিরে রাজনীতির পারদ চড়তে শুরু করল। বিজেপির কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নেতৃত্ব একযোগে তোপ দাগতে শুরু করল পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। বিধানসভায় মঙ্গলবার মহাকুম্ভকে ‘মৃত্যুকুম্ভ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিজেপি বিধায়কেরা সে সময়ে অধিবেশন কক্ষে ছিলেন না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের খবর ও ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তে না পড়তেই আক্রমণ তুঙ্গে তুলেছে বিজেপি। রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজমুদার বা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তো বটেই, মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা অমিত মালবীয়ও।

মঙ্গলবার বিধানসভায় বক্তৃতা করার সময় মুখ্যমন্ত্রী মহাকুম্ভ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘মহাকুম্ভ আমি না-ই বা বললাম! ওটা এখন মৃত্যুকুম্ভ হয়ে গিয়েছে। মৃত্যুকূপের মতো।’’ তবে এক নিঃশ্বাসেই মমতা বলেন, ‘‘আমি মহাকুম্ভকে সম্মান করি। শ্রদ্ধা জানাই। পবিত্র গঙ্গা মা’কে আমি সম্মান করি। কিন্তু পরিকল্পনা না করে এত হাইপ তুলে এত লোকের মৃত্যু! বললেন ৩০ জন। কথাটা কি সঠিক? কত মৃতদেহ ভাসিয়ে দিয়েছেন নদীতে? কত? হাজার হাজার!’’

প্রত্যাশিত ভাবেই মমতার বক্তব্যের শেষ অংশ (মহাকুম্ভকে সম্মান করা, শ্রদ্ধা জানানো) বাদ দিয়ে ‘মৃত্যুকুম্ভ’ শব্দবন্ধটি নিয়ে ময়দানে নেমেছে বিজেপি। সোমবার থেকে এমনিতেই মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর সরকারকে ‘হিন্দু-বিরোধী’ বলে আক্রমণ করছিলেন শুভেন্দু-সহ বিজেপির অন্য বিধায়কেরা। মঙ্গলবার বিরোধীদল-হীন সভাকক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর ওই শব্দবন্ধের বিষয়টি জেনেই বিজেপি তাদের হাতিয়ারে আরও শান দিতে শুরু করে। শুভেন্দু তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, ‘লজ্জাজনক, নিন্দনীয় এবং অসম্মানজনক! পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলছেন এটা মহাকুম্ভ নয়, মৃত্যুকুম্ভ! যে পবিত্র মহাকুম্ভ ১৪৪ বছর পর হচ্ছে, তার সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর কোনও ধারণাই নেই।’ শুভেন্দুর আরও বক্তব্য, ‘তাঁর (মমতার) জানা উচিত যে, এ বার পশ্চিমবঙ্গ থেকে রেকর্ড সংখ্যক পুণ্যার্থী মহাকুম্ভে গিয়েছেন এবং এখনও যাচ্ছেন।’

রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত আপাতত সরকারি সফরে আন্দামানে। সেখান থেকেই তিনি বলেছেন, ‘‘মহাকুম্ভ শুধু হিন্দুদের উৎসব নয়, এটা গোটা পৃথিবীর কাছে একটা ঐতিহ্য। কিন্তু শুধু নিজের ভোটব্যাঙ্ককে তোষণ করবেন বলে তিনি মহাকুম্ভ সম্পর্কে এই কথা বললেন।’’ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে চ্যালেঞ্জ করে সুকান্ত বলেন, ‘‘মহাকুম্ভ ঘুরে আসুন। যেখানে ইতিমধ্যেই ৫০ কোটি ভক্ত ডুব দিয়েছেন, সেখানকার জন্য কী বিশাল ব্যবস্থাপনা করা হয়েছে দেখে আসুন।’’ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা তথা বাংলার সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয় লিখেছেন, ‘‘মহাকুম্ভকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অযাচিত আক্রমণ হল ২০২৬ সালে তাঁর আশু পরাজয়ের প্রথম লক্ষণ। দিল্লিতে অরবিন্দ কেজরীওয়ালকে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যেতে দেখে তিনি ঘাবড়ে গিয়েছেন। তিনি চূড়ান্ত পরাজয়ের ভয় পাচ্ছেন।’’

মমতার শব্দবন্ধ কেন্দ্র করে কর্মসূচিও ঘোষণা করে দিয়েছেন শুভেন্দু। মুখ্যমন্ত্রীর ‘মৃত্যুকুম্ভ’ শব্দবন্ধ এবং বিজেপি বিধায়কদের সাসপেনশনের প্রতিবাদে বিজেপি পরিষদীয় দল বৃহস্পতিবার গোটা বিধানসভা জুড়ে মিছিল করবে বলে শুভেন্দু ঘোষণা করেছেন। বিধানসভা চত্বর থেকে বেরিয়ে সেই মিছিল যাবে রাজভবনে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের কাছে অভিযোগ জানানো হবে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। সে জন্য মঙ্গলবারই রাজ্যপালের কাছ থেকে সময় চাওয়া হয়েছে।
Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post